ভারতবর্ষে ইসলাম আগমনের পুর্বে নারী জাতির অবস্থা ছিল শোচনীয় । নারী পাপ এবং নৈতিক চরিত্র ও আধ্যাত্মিকতা ধ্বংসের মূল উৎস হিসেবে
পরিচিত ছিল । সুতরাং তাকে
সর্বদা শাসনাধীন রাখাই ছিল মূল রীতি ।
মনু’র
মতে “তাহাকে দিবারাত্রি অবশ্যই পুরুষের কড়া শাসনে রাখা আবশ্যক
। কারণ, নারী জন্মগতভাবেই দুশ্চরিত্রা ও লম্পট । অতএব, তাহাকে কঠোর শাসনে না রাখিলে সে অবশ্যই বিপথগামী হইবে । “ ( Amer
ali : The spirit of Islam, p30 ; Ramesh Chandra Mazumdar : “Ideal and position
of Indian Woman in Domestic life;” Great Woman of india (ed. Swamei and
mazumdar, p19)
নারীর ব্যপারে উপরিউক্ত ধারণাই সাধারণভাবে প্রচলিত ছিল । কিন্তু উচ্চ ও রাজবংশের নারিদেরকে ভিন্ন পুরুষ থেকে দূরে রাখা
হত । তাঁদের আবাসস্থল
সবসময় কড়া পাহারায় রাখা হত । কোনভাবেই বাহিরে যাওয়ার অনুমতি তাঁদের ছিলনা । কোন কারণে তারা জীবিকা উপর্জনে বাধ্য হলে, তাঁদের যেন সতীত্ব নষ্ট না হয়, সে দিকে কড়া নজর রাখা হত । পরিধিয় বস্ত্র কেনার জন্য তাদেরকে প্রত্যুষে বের হতে হত,
যেন কারও চোখে না পরে । তাঁর কেনা বস্ত্র যে কর্মচারী চয়ন করতো, তাকে
অন্ধকারেই সে কাজ সম্পন্ন করতে হত । সে যদি মহিলার মুখের দিকে তাকাইতো বা সে কাজ
ছাড়া অন্যদিকে মনোযোগ দিত, তবে তাকে
জরিমানা গুনতে হত । (A.L. Bashan :
The Wonder That was India, Fontana 1971, p181. )
সতীদাহ প্রথা প্রাচীন ভারতে সাধারণভাবে প্রচলিত ছিল । এই প্রথানুযায়ী স্ত্রীকে
তাঁর স্বামীর চিতায় আত্মবিসর্জন দিতে হত । এখনো এই প্রথা ভারতের কোন কোন স্থানে
প্রচলিত আছে । মাত্র কিছুদিন পুর্বেও ভারতকে আইন প্রণয়ন করে এটা বন্ধ করতে হয়েছে ।
হিন্দু সমাজে নারী অতীব অশুভ প্রাণী বিশেষ । তাই প্রথানুযায়ী নারীকে স্বামীর চিতায়
আত্মবিসর্জন দেয়াকেই অপমান ও লাঞ্ছনার জিবন অপেক্ষা শ্রেয় মনে কড়া হত ।
There is no creature more sinful then Woman. Woman is burning fire. She is
the sharp edge of the razor. She is verily all these in a body.
নারীর ন্যায় পাপ-পঙ্কিলতাময়
প্রাণী আর নেই । নারী
প্রজ্বলিত অগ্নিস্বরুপ । সে ক্ষুরের ধারালো দিক । এই সমষ্টিই দ্বারা তাঁর দেহ গঠিত
। ( professor Indra : statues of Woman in Mahabharat p.16.
)
‘Men should not love them’
-পুরুষের জন্য তাকে (নারী) ভালোবাসা উচিৎ নয় । ( Ibid, p 17 )
পুত্র সন্তান আগমনে পরিবারে আনন্দবন্যা
বয়ে যেত, আর কন্যা সন্তান এর বিপরীত ।
The birth of a girl grant if els-where, here grant a boy
হে দেবতা ! কন্যা সন্তান
অন্যত্র দিন, আর আমাদেরকে পুত্র সন্তান দিন । ( Ibid, p 21)
এখানে লেখক হিন্দু সমাজের অন্তরের আকাঙ্ক্ষার কথা ব্যক্ত করেছেন ।
প্রাচীন হিন্দু সমাজে প্রচলিত অসুর পিতা কর্তৃক কন্যার বিবাহ বিক্রয়স্বরূপ ছিল
। হিন্দু নারী কোন সম্পত্তির অধিকারী হতনা । সে যুগে বালিকাদেরকে মন্দিরে দেবতাদের
হাতে উৎসর্গ করা হত, দেবতারা তাদেরকে স্বীয় স্ত্রীর মত ব্যবহার
করত । ( Fida Hossain
Malik : Wives of the Prophet, P 12-15, )
ইসলাম পুর্ব পৃথিবীর কোন দেশেই নারী তাঁর যথাযত অধিকার প্রাপ্ত হতনা ।
কোথাও নারী কোনরকমের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারতোনা ।
আল্লাহ্ তায়ালা আমাদেরকে বোঝার তাওফিক দান করুন !