কোরবানি করা কেন হিংস্রতার বহিঃপ্রকাশ নয়?


মহান আল্লাহ্‌ তায়ালাকে স্রষ্টা স্বীকারকারী কোন জনগোষ্ঠী একথা বলে না যে, আল্লাহ্‌ জুলুমকারী ; বরং সব ধর্মের মানুষেই এটা স্বীকার করে যে আল্লাহ্‌ পরম করুণাময় ।

আপনি আল্লাহ্‌র কাজ কর্মের দিকে লক্ষ করুন, আর অবলোকন করুন আকাশের শূন্যতা , বাজ, শকুন সহ এজাতিয় অন্যান্য শিকারি পাখিকে,  তারা নিরীহ প্রাণীই ভক্ষণ করে থাকে আহার্য হিসেবে । শস্যদানা বা ফলফ্রুট তারা ভক্ষণ করেনা । আরও দেখুন, আগুন পতঙ্গের সাথে কিরূপ আচরণ করে । পানির দিকে লক্ষ করুন, তাতে কত রকমের হিংস্রপ্রানী বাস করে, বড়বড় জলজপ্রাণীগুলো ছোট ছোট পরানিগুলোকে আহার করে । এছাড়াও কোন কোন মাছ শিকারকে ধরার জন্য উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত ধাওয়া করে থাকে ।

আর লক্ষ করুন জমিনের দিকেও, পিঁপড়াভোজী প্রাণীগুলোর দিকে, কিভাবে সে তাঁর জিহ্বা বের করে ফাঁদ পাতে । তাঁর জিহ্বার মিষ্টতায় যখন পিঁপড়া তাতে প্রবেশ করে, তখন সে তাঁর জিহ্বা বন্ধ করে ফেলে । মাকড়াসা মাছি ভক্ষণ করে। বনের হিংস্রপ্রাণীগুলো নিরীহ প্রাণীগুলোকে আহার করে । কেউ কিন্তু বলেনা যে, না বাঘ হরিণ শিকার করতে পারবেনা । সিংহ মহিষ শিকার করবেনা । এটা খুবই হাস্যকর হবে যে, আমরা তাতে দ্বিমত পোষণ করি ।

জীবন সংহারকারী হযরত আজরাইল আঃ এর দিকে দেখুন,  তিনি প্রতিনিয়ত জিবন সংহার করে চলেছেন, এটাকেও দোষ দেয়ার কোন উপায় নেই ।

এখন আপনি ভেবে দেখুন, যদি এই ভেবে আমরা কোরবানি না করি যে তা হিংস্রাতার বহিঃপ্রকাশ, তবে কি সে প্রাণীগুলো সর্বদা বেঁচে থাকবে? এগুলোর দ্বারা যদি স্রষ্টার অনুগ্রহ প্রাপ্ত হয় তাতে ক্ষতি কি?

প্রকৃতির বিধান হল, প্রতিটি বস্তুই তাঁর সীমা অতিক্রম করে যেতে চায় । যদি প্রতিটি বটবৃক্ষের বীজ সংরক্ষণ করে রাখা হয়, আর তা থেকে গাছ অঙ্কুরিত হয়, তবে পৃথিবী বটবৃক্ষ দ্বারা ভরে যাবে । প্রতিটি বস্তুর ক্ষেত্রে এ কথা প্রযোজ্য । কিন্তু স্রষ্টার অপার মহিমা অবলোকন করে দেখুন, কৃতজ্ঞতায় মাথা নুইয়ে আসবে । তিনি প্রতিনিয়ত অসংখ্য বস্তুর পরিসমাপ্তির মাধ্যমে পৃথিবীকে ভারসাম্যপূর্ণ করে রেখেছেন । এর দ্বারা বুঝে আসে যে, নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট বস্তুর পরিসমাপ্তির মাধ্যমে পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষা করাই আল্লাহ্‌ তায়ালার অভিপ্রায় ।

কোরবানি করার মাঝেও আল্লাহ্‌র আদেশ নিহিত, তিনি এর দ্বারা পৃথিবীতে এমন কোন কল্যাণের ইচ্ছে রাখেন, যা আমাদের বোধগম্য হয়না । অনেক কিছুই তো আমাদের বুঝে আসেনা, তাই বলে আমরা তা থেকে কয়জনেই বা বিরত থাকি?


আল্লাহ্‌ আমাদেরকে সঠিক জ্ঞান দান করুন ! আমীন !!!